বন্যায় ভাসছে দেশ মানুষ গুলো নিরঅপরাধ। সপ্নের বাড়িটাও ডুবে যেতনা যদি থাকতো বেড়ি বাধ। প্রতিবেশী আর পাশের দেশ কেউ নয় আপন। বিপদে পাশে পাবে না যদিও হয়ে যাও দাপন। নদীর এ পাড়ে দুঃখ দেখে ওপাড়ে মানুষের রিদয় গলে না। বেড়িবাধ আমরা গড়বো মনে রেখো ওরা আমাদের কেউ না।
🔹 বন্যা ও বেড়িবাঁধের অভাব
“সপ্নের বাড়িটাও ডুবে যেতনা যদি থাকতো বেড়ি বাধ।”
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ, যেখানে প্রতি বছর বর্ষাকালে বন্যা হয়ে থাকে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চল, চর এলাকা ও নদীর তীরবর্তী মানুষদের জন্য বেড়িবাঁধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বেড়িবাঁধ না থাকলে নদীর পানি সহজেই লোকালয়ে প্রবেশ করে, ফসল নষ্ট হয়, ঘরবাড়ি ভেসে যায়। অথচ অবকাঠামোগত উন্নয়নের ঘাটতির কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো বহু এলাকায় নেই, বা থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কার্যকর নয়।
🔹 মানুষের দুর্ভোগ ও সরকারের উদাসীনতা
“দেশ মানুষ গুলো নিরঅপরাধ।”
বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও, এর ভয়াবহতা কমানো সম্ভব সঠিক প্রস্তুতি ও অবকাঠামোগত পরিকল্পনার মাধ্যমে। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক সময় সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ কষ্ট পায়। তারা নিজের দোষে নয়, বরং অব্যবস্থাপনার শিকার হয়।
🔹 আন্তর্জাতিক সহানুভূতির অভাব ও প্রতিবেশী দেশ
“প্রতিবেশী আর পাশের দেশ কেউ নয় আপন। বিপদে পাশে পাবে না যদিও হয়ে যাও দাপন।”
এখানে একটি তীব্র সামাজিক-রাজনৈতিক হতাশা ফুটে উঠেছে। যখন কোনো দেশ বা অঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে, তখন তাদের প্রতিবেশী বা বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে সহানুভূতি ও সহায়তা প্রত্যাশিত। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, এসব সহযোগিতা আসে না, বরং রাজনৈতিক স্বার্থ বড় হয়ে দাঁড়ায়।
🔹 মানসিকতা ও ভ্রাতৃত্বের অভাব
“নদীর এ পাড়ে দুঃখ দেখে ওপাড়ে মানুষের রিদয় গলে না।”
এটি কেবল দুই দেশের সীমান্তকে নির্দেশ করে না, বরং মানুষের মধ্যে একধরনের সহানুভূতির অভাবকেও নির্দেশ করে। একদিকে যখন মানুষ কষ্টে থাকে, অন্যদিকে তাদের প্রতি সহানুভূতি বা সাহায্য না পাওয়াটা একটি বড় সামাজিক সমস্যা।
🔹 উপসংহার: বেড়িবাঁধ আমাদেরই গড়তে হবে
“বেড়িবাধ আমরা গড়বো মনে রেখো ওরা আমাদের কেউ না।”
এই লাইনটি একটি জাগরণের ডাক। কবি বা লেখক হয়তো বোঝাতে চাচ্ছেন, কারো ওপর ভরসা না করে নিজেদের উদ্যোগে সুরক্ষা তৈরি করতে হবে। সরকার, এনজিও, কিংবা আন্তর্জাতিক সাহায্যের দিকে তাকিয়ে না থেকে স্থানীয় জনগণেরই উচিত সংগঠিত হয়ে নিজেদের রক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা।
▶ সারাংশ:
এই লেখাটিতে সামাজিক বঞ্চনা, রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা, অবকাঠামোগত দুর্বলতা এবং মানবিক সহানুভূতির অভাব—সবকিছুর একটা সংমিশ্রণ দেখা যায়। এটি কেবল কবিতা নয়, বরং একটি বাস্তবধর্মী আহ্বান।